সোমবার, ৭ নভেম্বর, ২০১১

আল - কুরআনে বিজ্ঞান (২য় পর্ব)

" তিনিই তোমাদেরকে দেখান বিজলী যা ভয় ও ভরসা সঞ্চার করে এবং তিনিই সৃষ্টি করেন ভারী মেঘ ;"
( সূরা : আর্ রা'দ, আয়াত : ১২ )


এই আয়াতে বিজলীর কথা বলা হয়েছে । যখন বিজলি চমকায় ঠিক তার পরই প্রচন্ড শব্দ শোনা যায় । তখন মানষের মধ্যে ভয়ের সৃষ্টি হয় । বিজলীর তীব্র আলোর ঝলক ভীতিকরভাবে চোখ ঝলসে দেয় এবং সাময়িকভাবে অন্ধ করে দিতে পারে । আবার পৃথিবী পৃষ্ঠের মধ্যে সংঘটিত বজ্র জীবন হানির কারণ ঘটায় এবং তাৎক্ষণিক মৃত্যু হয় । এতে সম্পদের ক্ষয় ক্ষতি হয় । কারণ, বজ্রপাতের স্থলে প্রচন্ড তাপের জন্য চারপাশের সবকিছু পুড়ে যায় । এজন্যই বিজলী ভয়ের সঞ্চার করে ।



কিন্তু উক্ত আয়াতে বলা হয়েছে ভয় ও ভরসার সঞ্চার করে । ভয়ের কথা বুঝতে পারলাম কিন্তু ভরসার সঞ্চার তাহলে কিভাবে হয় ? তাহলে শুনুন -


বজ্র বিদ্যুৎ বাতাসে অক্সিজেন ও নাইট্রোজেনকে একত্র করে এবং নাইট্রোজেনের অক্সাইড গঠন করে । মাটিতে পড়া বৃষ্টির ফোঁটা এই অক্সাইড বহন করে নিয়ে আসে এবং দ্রবীভূত নাইট্রোজেন যৌগের আকারে গাছপালার জন্য নাইট্রোজেন সরবরাহ করে । এই নাইট্রোজেন উদ্ভিদের বৃদ্ধি ও পুষ্টির জন্য দরকারী ।


আবর বজ্র - বিদ্যুত সহ ঝড়ের সময় গঠিত নাইট্রোজেন অক্সাইড বৃষ্টির পানির সাথে মিশে গিয়ে নাইট্রিক এসিডের খুবই তরল একটি দ্রবণ তৈরি করে । এভাবে বাতাসের এক উল্লেখ্যযোগ্য পরিমাণ অকার্যকর নাইট্রোজেনের উপাদান নাইট্রোজেন যৌগে রূপান্তরিত হয় এবং উদ্ভিদের খাদ্য হিসেবে ব্যবহারের জন্য মাটিতে সঞ্চিত থাকে ।


সুতরাং দেখা যায় যে, বজ্র বিদ্যুতের এই উপকারী অবদান ব্যতীত নাইট্রোজেন চক্রের এই অন্যতম উৎস বজায় রাখা সম্ভবপর হত না এবং পরিনামে উদ্ভিদ জগত ক্ষতিগ্রস্থ হত । তাহলে দেখা যায় ভীতিকর বজ্র - বিদ্যুৎ সত্যিকার অর্থেই ভরসার সঞ্চার করে ।


আর এটা আল্লাহতাআলার মহান করুণা ছাড়া আর কিছুই নয়